রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সাংবাদিক-সহ কয়েক জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ। মঙ্গলবার তিনি যোগ দেবেন ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা।
দিল্লি রওনা হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাওয়ার পথে প্রাপ্য বকেয়া নিয়ে তোপ দাগলেন কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, সংসদ হানা নিয়ে জানিয়ে গেলেন, নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে ন্যায্য প্রশ্ন তোলার ‘অপরাধে’ই সাসপেন্ড করা হয়েছে ডেরেক ও’ব্রায়েনদের। মমতার দাবি, কেন্দ্রের সরকার মানুষকে বিরক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পিত পরিকল্পনা করেছে। তা নিয়েই আওয়াজ তুলবে ‘ইন্ডিয়া’ ব্লক।
কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে বকেয়া পাওনা দেওয়া হচ্ছে না। এই প্রসঙ্গকে কার্যত রাজনীতির জ্বলন্ত প্রসঙ্গ করে তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাংসদরা দিল্লি অভিযান করেছেন অক্টোবরে। ডিসেম্বরে অভিষেকদের নিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। এ বার মমতা সাংসদদের নিয়ে দেখা করবেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। রবিবার দুপুরে বিমানে রাজধানী উড়ে গেলেন তিনি।
দিল্লি রওনা হওয়ার আগে মমতা জানিয়েছেন, সোমবার কয়েক জনের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। তার মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিকরাও। মঙ্গলবার ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। বুধবার সকাল ১১টায় অভিষেক-সহ আরও কয়েক জন সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে মমতা যাবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে একশো দিনের পাওনা টাকা-সহ একাধিক বকেয়া চেয়ে দরবার করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই মমতা টেনে আনেন সংসদে হানার প্রসঙ্গও। তাঁর দাবি, সংসদে এই ঘটনা প্রমাণ করে নিরাপত্তার গাফিলতি ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও তা মেনে নিয়েছে বলে দাবি মমতার। আর এ বিষয়ে ন্যায্য প্রশ্ন তোলার কারণেই সাসপেন্ড হতে হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেকদের। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতাদের কথায় এই ঘটনায় যোগের কথা উঠে আসছে বাংলারও। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘ওরা বলেছে বাংলার সঙ্গে এর কোনও যোগাযোগ নেই। ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত) নিরপেক্ষ হোক, সেটা আমরা চাই। এ জন্য আমরা কোনও উল্টোপাল্টা কমেন্টস (মন্তব্য) করি না। আমরা তো আর আবোল তাবোল করি না। যেটা বলব সেটা দায়িত্ব নিয়ে বলব। কাজেই আমরা আগে দায়িত্বশীল হই। এটা মাথায় রাখা উচিত।’’ এর পরেই সরাসরি বিজেপির দিকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী বলেন, ‘‘বাংলাকে নিয়ে কুৎসা, অপপ্রচার করাই এদের কাজ। বাংলা অপরাধমূলক কাজকে প্রশ্রয় দেয় না। লোকসভার সুরক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। সংসদে যা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে গুরুতর। আমি চাই, তদন্ত নিরপেক্ষ হোক। আমরা আরও দায়িত্বশীল হই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কে কী পরবে, কে কী খাবে, সিলেবাসে কী কী থাকবে, সব ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে বিরক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পিত পরিকল্পনা চলছে। সেটা নিয়ে আমরা আওয়াজ তুলব।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মানুষের দাবিদাওয়ার কথা জানাতে তাঁর সঙ্গে কয়েক জন সাংসদও প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন। তবে সেই তালিকায় অভিষেক ছাড়া আর কে কে যাবেন, তা পরবর্তী কালে তিনি জানিয়ে দেবেন।