ছ’দিনের সফরে উত্তরবঙ্গে এসে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সোজা কার্শিয়াংয়ে চলে যান তিনি। সরকারি সূত্রের খবর, সেখানে দু’দিনের এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন। কাল, শুক্রবার দুপুরে কার্শিয়াঙের মন্টিভিয়ট মাঠে একটি সরকারি সভায় যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমতলে নেমে আসার কথা। পরে তিনি আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির বানারহাট ঘুরে শিলিগুড়ির ‘উত্তরকন্যা’র অতিথিনিবাসে এসে উঠবেন। শিলিগুড়ির শহরে একটি সরকারি সভা করার কথা রয়েছে তাঁর। প্রশাসনিক স্তরে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
কার্শিয়াঙে পৌঁছনোর পরে, স্টেশন এলাকার রাস্তার দু’পাশে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা-কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীকে এ দিন পাহাড়ে স্বাগত জানান। সেখানে মিনিটখানেক গাড়িতে বসেই প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপার সঙ্গে একান্তে কথা বলেন মমতা। অনীত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে পাহাড়ে আবার স্বাগত জানানো হল। আমরা পাহাড়ের উন্নয়ন চাই। সে কাজ চলছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে, তাল মিলিয়ে কাজ করছি।’’
মুখ্যমন্ত্রী জেলায় থাকাকালীন আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব পর্যায়ে শিলিগুড়িতে দু’টি সরকারি বৈঠক হচ্ছে। সকালে সাড়ে ১০টা নাগাদ কাওয়াখালির বিশ্ববাংলা শিল্পী-হাটে বাণিজ্য বৈঠক হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প, পর্যটন ও চা-পর্যটন, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও কৃষি সহায়ক ব্যবস্থা, হর্টিকালচার, শিল্প পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণকে সামনে রেখে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্প সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে। এর পরে, বিকেল ৪টে নাগাদ হিলকার্ট রোডের মাল্লাগুড়িতে একটি হোটেলে পর্যটনের ‘নর্থ বেঙ্গল কনক্লেভ’ হচ্ছে। সেখানে হোটেল, পর্যটন, হোম স্টে-সহ পর্যটন সম্পর্কিত বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে।
দু’টি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী-সহ বিভিন্ন দফতরের সচিবেরা। দু’টিকেই সরকারি প্রশাসনিক বৈঠক বলা বলেও, উত্তরবঙ্গের সম্ভাব্য শিল্প বিনিয়োগ কিছু ছবি বৈঠকগুলি থেকে উঠে আসতে পারে। বিশেষ করে, কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলন থেকে পর্যটনকে শিল্প হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে এ বার রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পের জন্য নতুন নীতি তৈরি করছে। এই দু’টি বাণিজ্য ও পর্যটন বৈঠক থেকে উত্তরবঙ্গে আগামী ছ’মাসে কী-কী বিনিয়োগ হতে পারে, তা সরকারি পর্যায়ে পর্যালোচনা করা হতে পারে।
রাজ্য প্রশাসনের এক সচিবের কথায়, ‘‘আগামী বছরের গোড়ার দিকেই লোকসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। তার আগে, রাজ্যের তরফে কোথায়, কী শিল্প পরিস্থিতি রয়েছে তা দেখা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের শিল্প, বাণিজ্য এবং পর্যটন ক্ষেত্রে কোথায়, কেমন পরিস্থিতি, কী সমস্যা বা কী ধরনের বিনিয়োগ হচ্ছে তার রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।’’