কলকাতার বাতাসে ক্রমেই বাড়ছে বায়ুদূষণের মাত্রা। শীতের শুষ্ক মরসুমে সেই দূষণের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে আরও কয়েক গুণ। বাতাসে ধূলিকণা উড়ে শহরবাসীর শ্বাসপ্রশ্বাসেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বার সমস্যার সমাধানে একযোগ কাজ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা ও পরিবেশ দফতর।
গত শনিবার কলকাতা পুরসভার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিম দূষণজনিত সমস্যা সংক্রান্ত কয়েকটি ফোন পেয়েছেন। বিশেষ করে, কাশীপুরের বিটি রোড লাগোয়া এলাকায় ব্যাপক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে বলে মেয়রের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বাসিন্দারা। বিটি রোডের আশপাশে বসবাসকারীদের দুর্দশার কথা জেনেছেন ফিরহাদ। ওই রাস্তা দিয়ে বড় লরি, ট্রাক, বাস ইত্যাদি যাতায়াতের কারণে শুষ্ক মরসুমে ব্যাপক ধূলিকণা উড়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। পুর আধিকারিকদের মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। পুরসভা সূত্রে খবর, মিস্ট ক্যানন চালিয়ে ওই এলাকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের কিছু জায়গায় বায়ুদূষণের পরিমাণ বেশি। যেমন, চিংড়িঘাটা, ক্যাথিড্রাল রোড ইত্যাদি। এই সব জায়গার ‘এয়ার কোয়ালিটি’ বেশ খারাপ বলেই জেনেছে পুরসভা।তবে মাস কয়েক আগে পুরসভার একটি কমিটি মিস্ট ক্যানন চালানো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে অবশ্য সেই নির্দেশ তুলে নেওয়া হয়। মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব শহরে মিস্ট ক্যানন চালাতে হবে। সেখানে দূষণ কমাতে মিস্ট ক্যাননের সঙ্গে চালানো হবে স্প্রিঙ্কলারও।
আর কলকাতা শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ধরনের ছোট গাড়ি পথে নামাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (পিসিবি)। এই গাড়ির পোশাকি নাম ‘ডাস্ট সাপ্রেশন ইলেক্ট্রিক ভেহিকল’। এই গাড়িটি থেকে একটি বিশেষ রাসায়নিক জলে মিশিয়ে স্প্রে করা হবে। যে সব জায়গায় জল ছিটানো হত, সেখানেই এ বার এই বিশেষ রাসায়নিক মিশ্রিত জল দেওয়া হবে। পরিবেশ দফতর সূত্রে খবর, ছেটানো জল শুকিয়ে গেলেও, রাসায়নিকের উপস্থিতির কারণে ধূলিকণা ছয় থেকে সাড়ে ছ’ঘণ্টা থিতিয়ে থাকবে। ফলে বাতাসে দূষণ হবে না। দিনের বেলার কর্মব্যস্ত সময়ে কয়েক ঘণ্টা বাতাসের গুণমান ভাল থাকবে। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও কম হবে। সোমবার পর্ষদ এ রকম তিনটি গাড়ির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে বলে জানানো হয়েছে।