দুস্কৃতিদের আক্রমনে রক্তাক্ত সেন্ট জেভিয়ার্সের অধ্যাপক রবিউল ইসলাম!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মজলুমের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার তিনি। আর যে কারনে অনেক মূল্য চোকাতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু তবুও তিনি থেমে থাকেননি ।সমাজের নীচু তলার মানুষগুলোর পক্ষ নিয়ে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বারবার । বলছিলাম কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের গনিতের অধ্যাপক মোঃ রবিউল ইসলামের কথা।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ঈদের সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার স্বরুপনগর থানার অন্তর্গত গোয়ালদহ গ্রামে এলাকার দুর্বৃত্তদের দ্বারা বর্বরোচিত আক্রমণের শিকার হলেন তিনি। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কলকাতা থেকে নিজ গ্রাম গোয়ালদহ ফিরেছিলেন রবিউল ইসলাম। ঈদের নামাজ শেষ করে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট নাগাদ গোয়ালদহ বাবলা তলার একটি চায়ের দোকানে স্থানীয়দের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় সহ নানা বিষয়ে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্সের এই গনিতের অধ্যাপক । সেই সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলাকার পাঁচ সাতজন দুস্কৃতি ধারালো অস্ত্রপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় রবিউল ইসলামের উপর। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে শাড়াফুল সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন। ইতিমধ্যেই ঘটনার বিষয় নিয়ে ভারতীয় দন্ডবিধির 341/323/325/308/506/34 ধারা মতে ৫ জন দুস্কৃতির বিরুদ্ধে স্বরুপনগর থানায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। স্বরুপনগর পিএস কেস নং- 216/2024, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্বরুপনগর থানার পুলিশ।
অধ্যাপক রবিউল ইসলামের উপর বর্বোরোচিত এই হামলার খবর চাউর হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সমাজের বিদ্বজ্জনরা। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে আসামীদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন লেখক, সাহিত্যিক, অধ্যাপক থেকে আইনজীবীদের একাংশ। এদিকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামীদেরকে গ্রেফতার না করলে স্বরুপনগর থানা ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে একাধিক সামাজিক সংগঠন। নেশান ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক মাতিন মুফতি বলেন, ওসির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তিনি আসামীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি তিনি খুব শীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেফতার করবেন।
অধ্যাপক রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একটি তোলাবাজ গ্রুপ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। আর যেটার নেতৃত্ব দিচ্ছে মাঞ্জুর আলম বিল্লাহ্ নামের এক যুবক। ওদের তোলাবাজির বিরুদ্ধে আমি বরাবরই রুখে দাঁড়িয়েছি। যেটা ওরা সহজে হজম করতে না পেরে আমার উপর এভাবে হামলা চালিয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, মাঞ্জুর আলম বিল্লাহ্ নিজেকে সিপিআই এর একজন নেতা বলে দাবি করেন। চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা থেকে, লোন করিয়ে দেওয়া, এমন কি জমি রেকর্ড ও ভুয়ো দলিল করে দিয়েও লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ রয়েছে বছর চল্লিশের এই যুবকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাবলু গাজী নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, মাঞ্জুর আলম বিল্লাহ্ আমার কাছে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি দিতে অস্বীকার করায় আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকে, সেসময় অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সাহেব আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
স্বরুপনগর থানার ওসি প্রতাপ মোদক বলেন, অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সাহেবের উপর যে অনাকাঙ্খিত হামলা হয়েছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি ইতিমধ্যেই মামলা করেছেন, আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছি, অপরাধীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না।