মণিপুর, আদানি, সম্ভল: সংসদ অচলই

3 Min Read

নয়াদিল্লি: তৃতীয় দিনেও উত্তাল সংসদ। হল দফায় দফায় মুলতুবিও। মণিপুরে লাগাতার সহিংসতা, আদানি কেলেঙ্কারি ও উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে পুলিশের গুলিতে ৫ নিরীহ কিশোরের হত্যার ঘটনা—এই ইস্যুগুলি নিয়ে বুধবারও অচল অবস্থা জারি থাকল সংসদে। বিরোধী সাংসদদের দাবি, এই চলমান বিষয়গুলি নিয়েই আগে আলোচনা করতে হবে। অগ্রাধিকার দিতে হবে এই জ্বলন্ত ইস্যুগুলিকেই

এদিন লোকসভা ও রাজ্যসভা কার্যত অচল হয়ে যায় বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভ ও হইহট্ট গোলোরে জেরে। একসময় অধিবেশন পুরোপুরি স্থগিত করে দিতে বাধ্য হন স্পিকার। সংসদের উভয় কক্ষের (লোকসভা ও রাজ্যসভা) অধিবেশনই স্থগিত হয়ে যায়। তার আগে অবশ্য আরও দু’বার মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন। এদিন বিরোধীদের সবথেকে বেশি সরব হতে দেখা গিয়েছে আদানি দুর্নীতি ইস্যুতেই। এদিন অধিবেশন শুরু হতেই লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলের সাংসদরা একযোগে নোটিশ দিয়ে দাবি করতে থাকেন, আদানি দুর্নীতি থেকে শুরু করে মণিপুরের সহিংসতা ও সম্ভলে পুলিশের গুলি চালানোর মতো গুরুতর ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে। পূর্ব নির্ধারিত বিষয়গুলিকে আপাতত সরিয়ে রেখে এই গুরুতর জীবন্ত ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও নোটিশ পেশ করেন। পূর্ব নির্ধারিত সূচিগুলিকে আপাতত স্থগিত রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে যে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে সবার আগে আলোচনা করতে হবে। কংগ্রেস সাংসদ মণিকম ঠাকুর মুলতুবি প্রস্তাব আনেন। তিনি দাবি করেন, নির্ধারিত ইস্যু নিয়ে আলোচনার বিষয়টি আপাতত বন্ধ রেখে গুরুতর এই জরুরি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা দরকার। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারিও আদানি দুর্নীতি ইস্যুতে সরব হন। পরে সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি গৌতম আদানির গ্রেফতারির দাবি জানান। রাহুলের কথায়, ‘আপনারা কি মনে করেন আদানি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নেবেন? নিশ্চিতভাবেই তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করবেন। এখন বিষয় হচ্ছে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। সামান্য অভিযোগে শয়ে শয়ে লোককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে হাজার হাজার কোর্টির দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর (আদানি) জেলে থাকা উচিত। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে রক্ষা করে চলেছে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, আদানি ইস্যুতে ইডি, সিবিআই ও সেবিকে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক-শিল্পপতি আঁতাতের অস্ত্র হওয়া উচিত নয়। এখন সময় এসেছে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানগুলির নিজেদের ভাবমূর্তিকে আরও একবার তুলে ধরার। ইতিহাস এই সময়কে কখনও ভুলবে না, ক্ষমাও করবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Sign up for our Newsletter