কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে যেতে হয় ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরতে হয়। এই জাতীয় সড়ক ধরে এগোতে থাকলে নদিয়ার এক জায়গা সবার নজর কাড়বে। দেখা যাবে রাস্তার ধারে সাধারণ গ্রামের বাড়ির মতো একটি রেস্তোঁরা রয়েছে। তবে নানা পদ ও বাহারি খাবার-দাবার এখানে পরিবেশন করা হয়। গ্রামের বাড়ির মতো পরিবেশ যেমন একটা নজরকাড়া বিষয়, অন্যদিকে রান্নাঘর থেকে খাবার টেবিলে আনার বিষয়টিও অভিনব। এখানে কোনও মানুষের মাধ্যমে এটা হয় না, চলাফেরা করতে পারে কথাও বলে এমন একটি রোবট-এর মাধ্যমে চলে খাদ্যপরিবেশন।
আর একটি মজার ব্যাপার হল, অনন্যা নামের রোবট-এর কেউ পথ আটকালে সে অনুরোধ করতে জানে, ‘দয়া করে আমাকে যেতে দিন। দয়া করে পথে দাঁড়াবেন না এবং আমাকে পরিবেশন করতে দিন।’
সাদা রঙের রোবটটি প্রায় ৫ ফুট লম্বা। তার আয়তক্ষেত্রাকার ‘মুখ’ রয়েছে, যা সেন্সর-চালিত ডিজিটাল স্ক্রিন হিসাবে দ্বিগুণ হয়ে রান্নাঘরের কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট টেবিলে বসে থাকা কাস্টোমারদের অর্ডার করা খাবার পরিবহণে সহায়তা করে।
অনন্যার চাকা আছে কিন্তু হাত নেই। এছাড়াও রোবটের পরপর চারটি তাক উল্লম্বভাবে রয়েছে, যার মাধ্যমে সে খাবার বহন করে। তবে রেস্তোঁরার একজন কর্মী টেবিলের কাছে অপেক্ষা করেন। তিনি ট্রে থেকে খাবার বের করে পরিবেশনের সহায়তা করেন।
জানা গিয়েছে, কোনও বাধার সম্মুখীন হলে, রোবটটি তার গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য খাবারের জিনিসগুলিকে না ফেলেই ডানে বা বামে ঘুরতে পারে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার মুখে কলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের কাছে রাস্তার ধারেই এই অভিনব ভোজনশালাটি (রেস্তোঁরা) রয়েছে।
রেস্তোঁরার মালিক মি. মণ্ডল জানান, আগামী এক বছরের মধ্যে আরও কিছু রোবট-এর ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেস্তোরাঁয় রান্না করা, খাবার-দাবার প্লেটে রাখার পাশাপাশি ইত্যাদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকদের পরিবেশনার কাজও করবে রোবট। একই কথা জানান, আর এক মালিক আনাথবন্ধু গরাই।