চলতি বছর হজের মৌসুমে তীব্র গরমে সৌদিতে এক হাজারের বেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মারা যাওয়া এসব হজযাত্রীদের বেশিরভাগ নিবন্ধিত ছিলেন না। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রা প্রায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। চলতি হজের মৌসুমে তীব্র গরমে এক হাজারের বেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। তাদের অর্ধেকের বেশি ছিলেন অনিবন্ধিত হাজি।
বৃতস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে নতুন করে আরও ৫৮ জন মিসরীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। একটি কূটনীতিক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর হজের মৌসুমে ৬৫৮ জন মিসরীয় হাজি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩০ জনই ছিলেন অনিবন্ধিত। এছাড়া এ বছর প্রায় ১০টি দেশ এক হাজার ৮১ জন হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
চন্দ্র ক্যালেন্ডার হিসাবে হজের সময় নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসাবে চলতি বছরও হজ গ্রীষ্মের সময়ে সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে সৌদির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র মক্কার গ্রান্ড মসজিদে ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।
হজের সময় সৌদি কর্তৃপক্ষ কয়েক লাখ অনিবন্ধিত হজযাত্রীদের মক্কা থেকে বের করে দেওয়ার খবর জানায়। ফলে তীব্র গরমে সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন অনিবন্ধিত হজযাত্রীরা। কেননা নিবন্ধিত ১৮ লাখ হজযাত্রীর জন্য নির্ধারিত শীততাপ নিয়ন্ত্রিত জায়গাগুলোতে তারা প্রবেশ করতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার এক আরব কূটনীতিক জানান, আরাফার দিবসের আগে নিরাপত্তা বাহিনী তাড়া করলে অনিবন্ধিত হাজিরা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তীব্র গরমে তারা নিঃস্তেজ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, এসব হজযাত্রীর মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল উচ্চ তাপমাত্র। যা উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় দুলাখ ৪০ হাজার নাগরিক হজে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত বছর দেশটির ৩১৩ জন হজযাত্রী মারা গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
হজে গিয়ে নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়া, ভারত, জর্ডান, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, সুদান এবং ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানও। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এসব দেশ মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করেনি।