গাজা, ৭ এপ্রিল: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ-মিছিল শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, মরক্কো, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে হাজারো মানুষ। বিক্ষোভকারীদের চাওয়া দ্রুত গাজায় গণহত্যা বন্ধ হোক এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন ভূমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানাচ্ছেন।
রবিবার রাজধানী আঙ্কারা-সহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় তারা ‘জর্ডান নদীর তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন চাই’ ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, ইসরাইলের দখলদারী নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগানও দিয়েছেন। একই দাবিতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা।
সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে মরক্কোতে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির রাজধানী রাবাতে গতকাল রবিবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন লক্ষাধিক মানুষ। এ সময় তারা ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছেন। বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কাসাব্লাঙ্কা শহর থেকে রাবাতে এসেছিলেন মুহাম্মদ তৌসি। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘এখন আর এটা যুদ্ধের পর্যায়ে নেই। ইসরাইল গাজাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে; আর তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। জো বাইডেনের সময়ে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে রাখঢাক করা হচ্ছে কিন্তু এখন ট্রাম্পের সময়ে সবকিছুই খোলামেলা।’
অন্যদিকে, পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরের রাস্তাগুলো সোমবার ছিল জনমানবশূন্য। বন্ধ ছিল দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস। গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ফিলিস্তিনিরা এই সাধারণ ধর্মঘট পালন করে। ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল দখল করে রাখা পশ্চিম তীরজুড়ে দোকান, স্কুল ও বেশিরভাগ সরকারি প্রশাসনিক কার্যালয় এ দিন বন্ধ ছিল। ফাতাহ, হামাস-সহ বিভিন্ন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর একটি জোট এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। তারা বলেছে, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও চলমান হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদেই এই ধর্মঘট।’